ডেনভার সিরাপ ২০০ ও ৪০০ এর কাজ কি, কিসের ঔষধ, খাওয়ার নিয়ম

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ডেনভার সিরাপ সম্পর্কে অর্থাৎ এই আর্টিকেলে ডেনভার সিরাপ সম্পর্কিত সকল তথ্য বিশেষ করেঃ ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি, ডেনভার কিসের ঔষধ, খাওয়ার নিয়ম ও ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি এবং ডেনভার কিসের ঔষধ তা জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি-ডেনভার কিসের ঔষধ-ডেনভার ২০০ এর কাজ কি-ডেনভার ২০০ কিসের ঔষধ-ডেনভার ৪০০ এর কাজ কি-ডেনভার সিরাপ খাওয়ার নিয়ম-ডেনভার সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-ডেনভার সিরাপ এর দাম কত টাকা
যেহেতু এটি একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল এজন্য আপনি যদি তাড়াহুড়া করে পরের অর্থাৎ মনোযোগ দিয়ে না পড়েন তাহলে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারেন। এজন্য আপনি যখন ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি, ডেনভার কিসের ঔষধ এবং ডেনভার সিরাপ খাওয়ার নিয়ম অংশটুকু পড়বেন অবশ্যই পরিপূর্ণভাবে মনোযোগ দেবেন এবং বোঝার চেষ্টা করবেন।

ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি - ডেনভার কিসের ঔষধ

আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছেন ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি বা ডেনভার কিসের ঔষধ। আপনাদের সুবিধার আর্টিকেলের এই অংশ আলোচনা করা হবে এই সকল তথ্য সম্পর্কে। তবে মিলিগ্রামের উপরে ভিত্তি করে এই সিরাপ গুলোর কার্যকারিতা ভিন্ন ভাবে প্রদর্শিত হয়। এজন্য আপনার জন্য সঠিক ঔষধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের নির্দেশনা গ্রহণ করবেন।
যেহেতু এই ওষুধটি শিশুদের খাওয়ানো হয় এক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে কারণ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে তাই আপনি যদি ভুল পদ্ধতিতে এই ওষুধটি সেবন করান তাহলে উপকারিতা পরিবর্তে অপকারিতা পরিলক্ষিত হতে পারে। এজন্য সকল তথ্য জানার পাশাপাশি আপনি অবশ্যই ডেনভার সিরাপ খাওয়ার নিয়ম এবং ডেনভার সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভালোভাবে জেনে নেবেন যা এই আর্টিকেলেই আলোচিত হয়েছে।

ডেনভার সিরাপ একটি সাধারণত ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক, যা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত সেফিক্সিম নামক একটি উপাদান ধারণ করে, যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে এবং সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ব্যাকটেরিয়া সংক্রান্ত সকল রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনার শিশুকে এই ওষুধটি সেবন করাতে পারেন।
আর যেহেতু এই ঔষধের উপাদানের মধ্যে এন্টিবায়োটিক রয়েছে তাই এটি বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করবে। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন আগে জেনে নেওয়া যাক ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি । তবে সিরাপের কাজগুলো জানার পরে আপনি কখনোই এগুলো খাবার সিদ্ধান্ত নিবেন না, কারণ যে কোনো ওষুধ খাবার পরবে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশনা গ্রহণ করার প্রয়োজন। না হলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারেন।

ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি
  • মূত্রনালীর সংক্রমণ: ই. কলাই ও প্রোটিয়াস মিরাবিলিস দ্বারা সৃষ্ট মূত্রনালীর সংক্রমণ।
  • কানের সংক্রমণ: হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জি, মোরাক্সেলা ক্যাটারালিস ও স্ট্রেপ্টোককাস পায়োজেনস দ্বারা সৃষ্ট কানের সংক্রমণ।
  • গলা ও টনসিলের সংক্রমণ: স্ট্রেপ্টোককাস পায়োজেনস দ্বারা সৃষ্ট গলা ও টনসিলের সংক্রমণ।
  • শ্বাসনালীর সংক্রমণ: স্ট্রেপ্টোককাস নিউমোনি এবং হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জি দ্বারা সৃষ্ট শ্বাসনালীর সংক্রমণ।
  • অন্যান্য ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ: নেইসিরিয়া গনেরি দ্বারা সৃষ্ট অজটিল গনেরিয়া (সার্ভিক্যাল/ইউরেথ্রাল)।
তবে আপনি কি জানেন ডেনভার সিরাপটি কিভাবে কাজ করে? না জেনে থাকলে জেনে নিন।
  • ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস: ডেনভার সিরাপ ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর গঠনে বাধা দিয়ে ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে।
  • সংক্রমণ প্রতিরোধ: এটি বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ, যেমন মূত্রনালীর সংক্রমণ, কানের সংক্রমণ, ফুসফুসের সংক্রমণ ইত্যাদি প্রতিরোধ করে।
  • দ্রুত কার্যকর: ডেনভার সিরাপ সাধারণত খুব দ্রুত কাজ শুরু করে এবং সংক্রমণের লক্ষণগুলো দ্রুত কমিয়ে দেয়।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি এবং ডেনভার কিসের ঔষধ। এ সকল তথ্য জানার পরে আপনি যদি এই ওষুধটি খাবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন তাহলে সর্বপ্রথম আপনি একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে দেখা করবেন এবং যাবতীয় সমস্যা তার কাছে উপস্থাপন করবেন। তিনি রোগের শারীরিক পরিস্থিতি এবং রোগের ধরন অনুসারে চিকিৎসা পদ্ধতি প্রদান করবেন।

ডেনভার ২০০ এর কাজ কি, ডেনভার ২০০ কিসের ঔষধ, ডেনভার ৪০০ এর কাজ কি

আপনি যদি আর্টিকেলের উপরের অংশটুকু অর্থাৎ ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি অংশটুকু মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে হয়তো বুঝতে পেরেছেন এই ওষুধ সম্পর্কে। তবে এই সিরাপের মাত্রা বিধি রয়েছে অর্থাৎ আপনি এই সিরাপটি বাজারে ৫০ মিলিগ্রাম, ২০০ মিলিগ্রাম এবং ৪০০ মিলিগ্রাম আকারে পেয়ে যাবেন।

এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন হতেই পারে এই প্রত্যেকটি মাত্রা বিধির কার্যকারিতা কি একই? প্রশ্নের উত্তরটি হচ্ছে হ্যাঁ। ৫০ মিলিগ্রাম, 200 মিলিগ্রাম বা ৪০০ মিলিগ্রাম শুধুমাত্র পরিমাণের মাত্রা বৃদ্ধি কিন্তু কার্যকারিতা সবগুলো একই। মিলিগ্রাম যত বেশি হবে ওষুধের মাত্রা বা সিরাপের বোতলের সাইজ কত বেশি হবে। আপনি কত মিলিগ্রামের সিরাপ খাবেন সেটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার রোগের পরিধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরে।

আপনার রোগ যদি জটিল এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি কম হয় তাহলে দীর্ঘদিন যাবত সেবন করার জন্য বেশি মিলিগ্রামের সিরাপ সেবন করতে হবে। আর রোগের ধরন যদি সহনীয় মাত্রায় থাকে তাহলে অল্প দিনের জন্য কম মিলিগ্রামের সিরাপ সেবনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তো যারা প্রশ্ন করছিলেন ডেনভার ২০০ এর কাজ কি আশা করি তারা বুঝতে পেরেছেন এই সিরাপের কার্যকারিতা এবং মাত্রা বিধি সম্পর্কে। তবে যদি এই সিরাপ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে মুক্তি পেতে হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই এই সিরাপটি খাওয়ানোর সঠিক মাত্রা বিধি এবং নিয়মাবলী সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

ডেনভার সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

আমি প্রায় প্রথম থেকেই বলছি ডেনভার সিরাপ খাওয়ার নিয়ম যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই এটি জেনে নিবেন কারণ শুধুমাত্র এই সিরাপ নয় যেকোন ঔষধ এর কার্যকারিতা পরিপূর্ণভাবে নির্ভর করে এর সেবন বিধির উপরে। তাই আপনি যদি ভুল নিয়মে এটি আজীবন ও সেবন করেন তাহলে কোন ধরনের উপকারিতা পাবেন না।

এই ওষুধের প্যাকেটের মধ্যে একটি কাঁচের বোতল এবং একটি সিরিঞ্জ দেখতে পাবেন। আপনারা প্রথমে এগুলো দেখে ঘাবড়ে যাবেন না কারণ এই সিরাপটি পাউডার অবস্থায় থাকে যেটিকে একটি পদ্ধতির মাধ্যমে সিরাপে পরিণত করতে হয়। তো যাই হোক আপনারা প্রথমে সিরাপের বোতল এবং সিরিঞ্জটি বের করে আনবেন।
এরপর একটি পাতিলে পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে নেবেন যাতে পানির মধ্যে কোন জীবাণু বাঁচতে না পারে। এরপর পাতিল থেকে সাত চামচ পরিমাণ পানি ওই পাউডারের মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নেবেন। আপনার কাছে যদি চামচ না থাকে তাহলে ওই বোতলের মধ্যে থাকা সিরিঞ্জটি দিয়ে সাত চামচ পরিমাণ পানি পরিমাপ করতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে তিনবার পরিসিরিঞ্জটি পূর্ণ করতে হবে এবং একবার অর্ধেক পরিমাণে পরিমাপ করলেই সাত চামচ সমপরিমাণে পানি হয়ে যাবে।

তবে ওই ফুটন্ত গরম পানি ঠান্ডা করে পাউডারের মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে সিরাপে পরিণত করতে হবে। বয়স ভেদে এই সিরাপটি খাওয়ার আলাদা আলাদা দিক নির্দেশনা রয়েছে। আর মনে রাখবেন এই সিরাপটি প্রস্তুত করার চোদ্দ দিন পর্যন্ত এটি খাওয়ানো যাবে। 14 দিনের মধ্যে যদি সিরাপটি না ফুরিয়ে যায় তাহলে অবশিষ্ট সিরাপটুকু ফেলে দিতে হবে।
  • ১২ মাসের নিচের শিশুদের এই সিরাপটি খাওয়ানো যাবে না
  • ১২ মাস থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের খাবার পর এক চামচ করে তিনবার খাওয়াতে হবে।
  • ছয় বছর থেকে ১২ বছর বয়সে শিশুদের ক্ষেত্রে খাবার পরে দুই চামচ করে তিনবার খাওয়াতে হবে।
তবে যদি আপনার শিশুর সেফিক্সিম বা অন্য কোন সেফালোস্পোরিন এন্টিবায়োটিকের প্রতি অ্যালার্জি থাকে, তাহলে ডেনভার সিরাপ ব্যবহার করবেন না। এজন্য সবচেয়ে ভালো হয় একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশনা গ্রহণ করা এবং তার নির্দেশিত চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসারে সিরাপটি তৈরি করে সেবন করানো।

ডেনভার সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

প্রায় প্রত্যেকটি ওষুধের উপকারিতার পাশাপাশি সামান্য কিছু উপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকেই যায়। ঠিক তেমনি ভাবে ডেনভার সিরাপ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না। তাই যারা এই সম্পর্কে জানেন না তারা আর্টিকেলের এই অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়লে সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
  • পাকস্থলী ও অন্ত্রের সমস্যা: ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা, বদহজম ইত্যাদি।
  • চামড়ার সমস্যা: চুলকানি, ফুসকুড়ি, লালচে দাগ।
  • অন্যান্য: মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি ইত্যাদি।
  • অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া: শ্বাসকষ্ট, মুখ বা গলা ফুলে যাওয়া, চামড়ায় গুরুতর ফুসকুড়ি।
  • যকৃতের সমস্যা: জন্ডিস, পেটে ব্যথা, অন্ধকার রঙের প্রস্রাব।

ব্যক্তিগত মতামত

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে ডেনভার সিরাপ এর কাজ কি, ডেনভার কিসের ঔষধ এবং এই সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছেন। আপনি নিত্য নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের পাশেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩