২০২৫ আসল শিলাজিৎ চেনার উপায়, বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জানানো হবে আসল শিলাজিৎ চেনার উপায় এবং শিলাজিৎ বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে। তাই আপনি যদি শিলাজিৎ খাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই আসল শিলাজিৎ চেনার উপায় জেনে নিতে হবে না হলে আপনি ঠকে যাবেন।
শিলাজিৎ বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়, আসল শিলাজিৎ চেনার উপায়
তবে চেনার পরে আপনি যেকোনো জায়গা থেকে নিলেও আর ঠকবেন না কারণ আপনি আসল জিনিস চিনেন। তারপরও জেনে নিবেন শিলাজিৎ বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় অর্থাৎ কোন স্থানে খাঁটি পাওয়া যায় কোন ভেজাল ছাড়া। বাংলাদেশের বর্তমান যে অবস্থা তাতে অনলাইনে কোন প্রোডাক্ট কিনলে অধিকাংশই ভেজাল প্রমাণিত হয়। অনেক কথা বলে ফেলেছি চলুন আগে জেনে নেওয়া যাক আসল শিলাজিৎ চেনার উপায় গুলো সম্পর্কে।

শিলাজিৎ এর উপকারিতা। শিলাজিৎ এর কাজ কি

শিলাজিৎ এর উপকারিতার কথা যতই বলা হবে ততই কম হয়ে যাবে অর্থাৎ এর মধ্যে এত উপকারিতা রয়েছে যা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। তবে ছোট্ট করে বললে আপনারা বুঝবেন, শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমৃদ্ধি করার জন্য যত প্রকার ভেষজ উপাদান রয়েছে তার মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী এবং কার্যকর ভেষজ হচ্ছে শিলাজিৎ।

শিলাজিৎ একটি প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থ। এটি সাধারণত ভারতীয় উপমহাদেশের হিমালয় পর্বতমালার সাইডে পাওয়া যায়। এটি একটি বিরল প্রজাতির প্রাকৃতিক ঔষধ যা আগে বহু পরিমাণে পাওয়া গেলেও বর্তমানে এর স্বল্পতা রয়েছে। তবে আগে পরিমাণে বেশি থাকলেও মানুষ এই সম্পর্কে কম তথ্য জেনে এসে ফলে উপকারিতা সেভাবে গ্রহণ করতে পারেনি।
আবার এগুলোর উপকারিতা রয়েছে সেগুলো মানুষের খুব একটা প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে বর্তমানে মানুষের যেসব শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা রয়েছে তার সকল সমস্যা রয়েছে এই প্রাকৃতিক পদার্থ শিলাজিৎ এর মধ্যে। এটি মূলত তৈরি হয় হাজার বছর ধরে পচনশীল ঔষধি গাছ এবং বিভিন্ন উপকারী উপাদানের মাধ্যমে।

পাহাড়ের উপরে যেসব ঔষধি গাছ জন্মে এবং অন্যান্য উপকারী গাছ জন্মে ওইগুলো মরে পোছে বাদামি রঙের চটচটে আঠার মত উপকরণ হয়ে বেরিয়ে আসে। এগুলো ধীরে ধীরে পাহাড় বেয়ে নিচের দিকে নেমে আসে এবং সেখান থেকেই এগুলো সংগ্রহ করা হয়। এই শিলাজিতের মধ্যে এত কার্যকারী উপকারিতা থাকার একমাত্র কারণ হলো এর উপাদান কারণ উপাদানের জন্যই এটি আমাদের শরীরে এত ভালোভাবে কাজ করতে পারে।

এর মধ্যে রয়েছে জিংক, কপার, সেলেনিয়াম, আইরন, সিলিকন, ম্যাঙ্গানিজ, মলিবডেনাম, প্লাটিনিয়াম এবং ক্রোমিয়ামের মত শক্তিশালী খনিজ মৌল এবং অ্যামিনো অ্যাসিড। তো বুঝতে পারছেন যার মধ্যে এতগুলো শক্তিশালী উপাদান রয়েছে তাহলে তার উপকারিতা হবে না কেন। তো চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক এর উপকারিতা সম্পর্কে অর্থাৎ এটি সেবনের ফলে আমাদের দেহে এটি কি কি ধরনের উপকার করে থাকে।

শিলাজিৎ এর উপকারিতা নিম্নরুপঃ
  • ধ্বজভঙ্গ
  • শীঘ্রপতন
  • টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করে
  • শুক্রানুর উৎপাদন বাড়ে
  • বীর্যের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়
  • ধাতু পাতলা বা পাতল বীর্জ
  • পুরুষের বর্ণান্ধতা
  • সকল ধরনের যৌন দুর্বলতা দূর করে
  • মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে
এছাড়া এর আরো বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। আপনি যদি দুর্বলতা অনুভব করেন সেক্ষেত্রে দেরি না করে শিলাজিৎ চেনার উপায় ভালোভাবে জেনে নিয়ে খাওয়া শুরু করেন। এটি সঠিক নিয়মে সেবন করলে আপনার মনে হবে আপনি আপনার যৌবন নতুন করে ফিরে পেয়েছেন। শরীরে চলে আসবে অন্যরকম তেজ।

আসল শিলাজিৎ চেনার উপায়

বর্তমান সময়ে যেহেতু শিলাজিৎ এর উপকারিতার কথা মানুষ জানতে পেরেছে এবং এর বিক্রিও বেশি হচ্ছে তাই নির্দ্বিধায় বলা যায় শিলাজিৎ এর ভেজালও বেশি। তাই আপনি যদি এই সময়ে শিলাজিৎ সেবনের মাধ্যমে এর উপকারিতা গুলো কাজে লাগিয়ে আপনার সকল সমস্যা সমাধান করতে চান তাহলে আপনাকে আগে জেনে নিতে হবে আসল শিলাজিৎ চেনার উপায় সম্পর্কে।
এটি চেনার অনেক রকম উপায় রয়েছে। তবে সব থেকে দুটি কার্যকরী উপায় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। আপনারা যদি এই দুইটি মাধ্যম অবলম্বন করেন তাহলে খুব সহজেই আসল শিলাজিৎ চিনতে পারবেন এবং প্রতারিত হবেন না।

প্রথম উপায়

একটি কাঠিতে সামান্য পরিমান শিলাজিৎ নিয়ে এর নিচে আগুনের তাপ দিবেন। যদি শিলাজিৎ গলে যায় তাহলে বলবেন এটি নকল। আর যদি গলে না গিয়ে রাবারের মতো ফুলে ওঠে তাহলে বুঝবেন আপনি যে শিলাজিৎ ক্রয় করেছেন সেটি একদম আসল এবং অরজিনাল।

দ্বিতীয় উপায়

প্রথমে একটি গ্লাসে সামান্য পানি নিয়ে নিবেন। পানির মধ্যে অল্প পরিমাণে শিলাজিৎ দিয়ে চামচ দিয়ে মিশ্রণ করতে থাকবেন। যদি শিলাজিৎ সম্পূর্ণ পরিমাণে গলে গিয়ে মাছ পানির সাথে দ্রবীভূত হয় বাদামি কালার ধারণ করে তাহলে বুঝবেন সেটি আসল শিলাজিৎ। আর যদি পানির সাথে পরিপূর্ণ দ্রবীভূত না হয়ে দানাদার হয়ে থাকে তাহলে বুঝবেন এটি নকল।

তো আপনারা চাইলে কিন্তু শুধুমাত্র এই দুইটি পরীক্ষাকে আসল শিলাজিৎ চেনার উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া অন্য অভিজ্ঞ ব্যক্তি থাকলে আপনি তাদের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন এটি আসল নাকি নকল।

শিলাজিৎ খাবার নিয়ম

শিলাজিৎ খাবার নিয়ম নির্ভর করছে সম্পূর্ণরূপে আপনার উপরে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেন এবং সকালে ঘুম থেকে উঠার পরে এক্সারসাইজ করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য শিলাজিৎ খাওয়ার সঠিক সময় হলে সকালবেলা। আর আপনি যদি সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন তাহলে আপনি সন্ধ্যা রাতে শিলাজিৎ খেতে পারেন। তবে দিনে একবারের বেশি কখনই খাবেন না।

যদি শিলাজিৎ ক্যাপসুল সেবন করে থাকেন সেক্ষেত্রে পানি দিয়ে খেয়ে নেবেন। আর যদি লিকুইড ফর্মে পান করতে চান তাহলে শিলাজিৎ প্রথমে কুসুম গরম পানির সাথে কিংবা গরম দুধের সাথে ভালোভাবে দ্রবীভূত করে সেবন করবেন।

শিলাজিৎ বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়

এক কথায় বলতে গেলে শিলাজিৎ যেহেতু বাংলাদেশের পাহাড়ে পাওয়া যায় না তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায় এটা বলা সম্ভব না। তবে অনেকগুলো ব্র্যান্ড রয়েছে যারা ভারতের থেকে বা নেপাল থেকে এগুলো আমদানি করে থাকে। বিশেষ করে আপনি এগুলো অনলাইনের মাধ্যমে সহজে ক্রয় করতে পারবেন।

অনেকে জিজ্ঞেস করে সশরীরে শিলাজিৎ বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়? এগুলো আপনি বিভিন্ন হারবাল মেডিকেলে কিংবা ভেষজ চিকিৎসালয় পেয়ে যাবেন। তবে ওখান থেকে ক্রয় করার সময় অবশ্যই আসল নাকি নকল সেটা চেক করে নিবেন, যা আমাদের আর্টিকেলের উপরের অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

শিলাজিৎ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

যেহেতু এটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া পদার্থ তাই এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মৌল এবং উপাদান থাকে। যেসব ব্র্যান্ড এগুলোর পরিশোধন করে তাদের উপর নির্ভর করে আপনি সেবনের পরে শিলাজিৎ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো দেখা দেবে নাকি দেখা দেবে না। সাধারণত যেসব ব্র্যান্ড কম দামে শিলাজিৎ বিক্রি করে তারা ভালোভাবে পরিশোধন করেন যার ফলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
আর যারা এগুলো ভালোভাবে পরিশোধন করে তারা বেশি দামে বিক্রি করে সে ক্ষেত্রে খুব একটা দেখা দেয় না পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কম দামে পেলে সেটাই আগে কিনে যার ফলে এগুলো সম্মুখীন হয়। সাধারণ ক্ষেত্রে শিলাজিৎ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলোর মধ্যে রয়েছেঃ মাথা ঘোর, এলার্জিক প্রতিক্রিয়া, শ্বাস-প্রশ্বাস কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়া, ঘন ঘন প্রসব হওয়া ইত্যাদি।

শিলাজিৎ গোল্ড ক্যাপসুল এর দাম কত। শিলাজিৎ এর দাম কত

শিলাজিৎ গোল্ড এর ১০ টি ক্যাপসুল এর দাম ৬০০ টাকা। এছাড়া আপনি যদি পানিতে মিশিয়ে খাওয়ার জন্য প্যাকেট হিসেবে কিনতে চান সেক্ষেত্রে ১০০ গ্রামের দাম পড়বে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। অর্থাৎ ১ কেজি শিলাজিৎ ক্রয় করতে হলে আপনাকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হতে পারে।

ব্যক্তিগত মতামত

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে শিলাজিৎ বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়, আসল শিলাজিৎ চেনার উপায় এবং এ সম্পর্কে অন্যান্য তথ্যগুলো আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি উপকৃত হয়েছেন। যদি সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিত্য নতুন আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। আপনি যদি নতুন নতুন আর্টিকেলগুলো পড়তে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেজ ভিজিট করতে পারেন। আর এই সম্পর্কে কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দেবেন। আজকে এই পর্যন্তই, আবার দেখা হবে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য অন্য কোন আর্টিকেলের মাধ্যমে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩