সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায় জেনে নিন আসল তথ্য

সিজার নিয়ে অধিকাংশ মেয়েদের মধ্যে ভুল ধারনা রয়েছে, আর সেই ধারণা থেকে বিভিন্ন রকমের বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্ন করে। তো আজকের আর্টিকেলে সিজারের পরের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে যার মধ্যে অন্যতম হলো সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায় এই সম্পর্কে। তাই আপনি যদি জানতে চান যে সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায় তাহলে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

যেহেতু এটি একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল এবং নারী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তাই আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে। আপনি যদি তাড়াহুড়া করে ভুল বুঝেন তাহলে মা এবং শিশুর সাস্থের ক্ষতিসাধন হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিভিন্ন অদক্ষতার কারণে শিশুর মারাত্মক ও কঠিন রোগ দেখা দেয়, তাই অবশ্যই এ সমস্ত বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায়।

সিজারের পর কোন ফল খাওয়া যাবে না

সিজারের পর খাবারের দিকে অবশ্যই নজরদারি দিতে হবে। ফল কিন্তু যে কোন অপারেশনের পরে বেশ ভালো রকমের কার্যকারিতা পালন করে। কিন্তু এমন কিছু ফল রয়েছে যেগুলো সিজারের পরে কখনোই খাওয়া যাবে না। আপনি যদি সিজারের পর এই ফলগুলো খান তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের সমস্যা হতে পারে এমনকি সেলাই শুকাতে দেরি হতে পারে।
ফলগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ লেবু, কমলা, কামরাঙ্গা, আমড়া, আনারস, আমলকি, পেপে ইত্যাদি। যেহেতু এগুলো অম্লীয় প্রকৃতির তাই কখনো এগুলো খাওয়া যাবে না। এক কথায় টক জাতীয় যত খাবার রয়েছে কোনোটিকেই আপনি সাপোর্ট করবেন না যদি আপনি একজন সিজারিয়ান মহিলা হয়ে থাকেন।

সিজারের পর কলা খাওয়া যাবে কি?

হ্যাঁ অবশ্যই, আপনি সিজারের পরে কলা খেতে পারবেন কারণ এটি অতি সহজেই হজম হয়ে যায় এবং শরীরের বেশ কিছু উপকার করে। তাই আপনি যদি একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশনা গ্রহণ করেন তাহলে সে আপনাকে অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকার মধ্যে কলা রাখতে বলবে।

সিজারের পর শোয়ার নিয়ম

সিজারের পরে মূলত ৪ ভাবে শোয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। প্রথম হল পিঠের উপরে ভর দিয়ে চিৎ হয়ে শোয়া, ডান কাতে শোয়া, বাম কাতে শোয়া এবং শেষেরটি হল পিঠের নিচে বালিশ নিয়ে আধা শোয়া ভঙ্গিতে শোয়া। আপনি যদি এই নিয়োগ গুলো ফলো করেন তাহলে সিজারের সেলাইয়ের কোন ক্ষতি হবে না।

সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায়

আমাদের গ্রাম বাংলায় একটা ভুল ধারনা রয়েছে যে সিজারের পরে দুধ খাওয়া যাবে না কিংবা দুধ খেলে অমঙ্গল হবে এই টাইপের কিছু কথা। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে সিজারের সাথে দুধ খাওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। সিজারের পরে যেসব খাবার খাওয়া যাবে না তাই মধ্যে দুধের নাম উল্লেখ নেই। তাই আপনারা যা ভাবছেন সেটি সম্পূর্ণরুপে ভুল ধারনা। আর এই ধারণা থেকেই অধিকাংশ মানুষের প্রশ্ন করে সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায় বা যাবে?
তবে সিজারের প্রথম ৭ দিন যেকোন খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেহেতু সিজারের প্রথম দিন তরল খাবার খেতে হয়, আর দুধ যেহেতু তরল খাবার তাই সিজারের প্রথম দিনেই দুধ খাওয়া যাবে তবে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রেখে। আপনার যদি গ্যাসের সমস্যা ও হজমের সমস্যা থাকে তাহলে সিজারের পরে দুধ খাবেন না। কারন দুধ খেলে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যায়। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি দুধের সাথে একটু চিনি কিংবা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যায়

যেহেতু মিষ্টি খেলে সিজারের সেলাই শুকাতে একটু বেশি সময় লাগতে পারে তাই আপনাদের উচিত এই সময় লাগদে পারে তাই আপনাকে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। তাই পরিপূর্ণ সুস্থ হওয়ার অর্থাৎ তিন থেকে চার সপ্তাহ পরে বা ২০ থেকে ৩০ দিন পরে মিষ্টি খাওয়া যায়।

সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে

সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে এটা ব্যক্তিবিদে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে, কারণ প্রত্যেক ব্যক্তির সহ্য ক্ষমতা আলাদা আলাদা হয়। তবে যেহেতু সিজারের পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে সেলাই কাটা যায় তাই মোটামুটি সিজারের পর ব্যথা খুব একটা বেশিদিন থাকে না, আর থাকলেও সর্বোচ্চ সাত দিন থাকে।

সিজারের কতদিন পর সহবাস করা যায়

সিজারের পরে সহবাসের কোন নির্দিষ্ট সময়সূচী নেই। সিজারের পরে যেহেতু পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হতে চার থেকে ছয় সপ্তাহ বা ২৮ দিন থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে তাই সব থেকে ভালো হয় যে সিজারের ৪০ দিন পরে সহবাস করা। তাই আপনি যদি কোন সমস্যা না চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এই নিয়মটি অনুসরণ করবেন। আর চিকিৎসকেরা মূলত ৪০ দিন পরেই সহবাসের নির্দেশনা দেয়।

সিজারের কতদিন পর বাচ্চা নেওয়া যায়

এটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত বিষয়, তবে এক্ষেত্রে কিছু ডাক্তারি নির্দেশনা রয়েছে। চিকিৎসকদের মতোই আপনি যদি কোন স্বাস্থ্য ঝুকি বাদে আবার বাচ্চা নিতে চান তাহলে আপনাকে অন্তত দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে। যদিও আমাদের গ্রাম বাংলায় এই নিয়ম অনেকেই আগে মানতো না কিন্তু বর্তমানে সতর্কতা বৃদ্ধির জন্য অধিকাংশ মানুষই এই নিয়মটা অনুসরণ করছে।

সিজারের কতদিন পর মাসিক হয়

সিজারের কতদিন পর মাসিক হবে সেটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিজারের ৪০ দিন থেকে ৫৬ দিনের মধ্যেই নিয়মিত মাসিক শুরু হয়।

সিজারের কতদিন পর গোসল করা যায়

সিজারের কারনে যেহেতু সেলাই দেওয়া হয় তাই এক্ষেত্রে গোসলের ক্ষেত্রে একটু সময় দেওয়া উচিত। চিকিৎসকদের মতে সিজারের পরে দুই থেকে তিন দিন পর গোসল করা যায়। কিন্তু যদি শীতকাল হয় সেক্ষেত্রে অনেকেই এক সপ্তাহ পর গোসল করে।

সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়

এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয় নির্ভর করে থাকে। মূল কথা হল লং জার্নি কোনো বিষয় নয়, বিষয় হলো আপনি কি ধরনের পরিবহন ব্যবহার করছেন, রাস্তার মধ্যে কোন ঝাকিয়ে রয়েছে কিনা, এবং পরিবহনের সিট কতটুকু আরামদায়ক। দেখা যাচ্ছে আপনি অল্প সময় জার্নি করবেন কিন্তু ওই রাস্তা খুব ভালো তাহলেই যে বিষয় হচ্ছে, আবার আপনি লং জার্নি করবেন কিন্তু রাস্তা মোটামুটি ভালো তাহলে একই বিষয়। অর্থাৎ আপনি লং জার্নি করলেও সমস্যা নাই যদি রাস্তা ভালো থাকে এবং পরিবহন ভালো হয়।

শেষ কথাঃ সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায়

আমাদের আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায় এটি জানার পাশাপাশি আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনেছেন। আশা করি এটি পড়ে আপনি অবশ্যই উপকৃত হয়েছেন। আর আপনার যদি কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪