আমেরিকা, কানাডার, দুবাই-সৌদি আরব, ইন্ডিয়ান মাল্টিপল ভিসা কি

পাঠক, আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন মাল্টিপল ভিসা সংক্রান্ত সকল বিষয়। আপনি যদি কোন দেশে মাল্টিপল ভিসায় যেতে চান তাহলে কিভাবে কি করবেন সেই সকল তথ্য জানতে পারবেন আজকের এই আর্টিকেল থেকে। তাই চলুন বাড়তি সময় নষ্ট না করে মূল আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আমেরিকা, কানাডার, দুবাই-সৌদি আরব, ইন্ডিয়ান মাল্টিপল ভিসা কি
যেহেতু এটি একটি বিদেশ যাওয়া সম্পর্কিত পোস্ট তাই অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। অনেকেই তাড়াহুড়া করে পরে ভুল বুঝে এবং পরে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়ে থাকে। তাই আপনাদের অনুরোধ করবো আপনাদের হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় না থাকে তাহলে পরবর্তী কোনো সময়ে আর্টিকেলটি ঠান্ডা মাথায় পরে নিবেন।

মাল্টিপল ভিসা কি

মাল্টিপল ভিসা হল এমন এক ধরনের ভিসা যেটি সাধারণত ব্যবসায়ীরা বেশি ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে এরকম হয় যে আপনি একটি দেশে আপনার বারবার যাওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে আবার ওই দেশ থেকে আপনাদের নিজের দেশেও আসা লাগতে পারে সেক্ষেত্রে মাল্টিপল ভিসা হলে সবথেকে সুবিধার জন্য এবং ভালো রকমের ভিসা।

এক কথায় বলতে গেলে মাল্টিপল ভিসা হলো এমন এক ধরনের ভিসা যে ভিসার মাধ্যমে আপনি একটি নির্দিষ্ট দেশে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একাধিকবার যাতায়াত করতে পারবেন। এই ভিসার মেয়াদকাল ছয় মাস এক বছর দুই বছর পাঁচ বছরের হয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনি যদি একটি দেশের জন্য 5 বছরের মাল্টিপল ভিসা করে নেন তাহলে আপনি পাঁচ বছরের মধ্যে যতবার ইচ্ছা ততবার ওই দেশের যেতে পারবেন আপনাকে অতিরিক্ত ভাবে আর বারবার ভিসা করা লাগবে না।

মাল্টিপল ভিসা মানে কি

মাল্টিপল ভিসা মানে হল একটি দেশের জন্য একবার ভিসা করে বারবার যাওয়া সুযোগ। আপনি যদি এই ভিসা করেন তাহলে আপনাকে আর বারবার ভিসা করা লাগবে না। বিশেষ করে যারা পর্যটক এবং ব্যবসায়ী রয়েছে তারা এ ধরনের ভিসা করে থাকে। কারণ আপনি যদি যতবার যেতে চান ততবার যদি আপনাকে ভিসা করা লাগতে পারে সে ক্ষেত্রে একটি সময় সাপেক্ষ বিষয় হতে পারে।

মাল্টিপল ভিসা পাওয়ার উপায়

মাল্টিপল ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই নিম দত্ত পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে হবে না হলে আপনি কখনোই মাল্টিপল ভিসা পেতে পারবেন না। তো কথাটা বাড়িয়ে চলুন, মাল্টিপল ভিসা পাওয়ার উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক।
  • মাল্টিপল ভিসার জন্য আবেদন
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান
  • আবেদন ফি প্রদান
  • সঠিকভাবে ইন্টারভিউ দেওয়া
  • ভ্রমণের উদ্দেশ্য সঠিকভাবে বলা
  • সকল নিয়ম কানুন মেনে চলা

মাল্টিপল ভিসার খরচ

মাল্টিপল ভিসার খরচ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে থাকে। আপনি কোন দেশে যাচ্ছেন এবং কত দিনের জন্য যাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে মূলত মাল্টিপল ভিসার খরচ নির্ভর করে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি কোন এজেন্সি থেকে যাচ্ছেন তার ওপরেও অনেকটা খরচ নির্ভর করে থাকে। আপনি যদি বিশ্বস্ত এবং উন্নতমানের এজেন্সি থেকে মাল্টিপল ভিসা করেন তাহলে খরচ বেশি হবে এবং আপনি যদি নিম্নমানের এজেন্সি থেকে এটি করেন তাহলে কম খরচ হবে।
সৌদি আরবের কথা হিসাব করলে, সৌদি আরবের মাল্টিপল ভিসার জন্য যেরকম ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। কারণ এজেন্সিকে প্রদান করতে হয় ১৩ হাজার টাকায় এবং ইন্সুরেন্স বাবদ খরচ দিয়ে মোটামুটি ১৬ হাজার টাকা খরচ লাগে। এছাড়া অন্যান্য খরচ সহ প্রায় অনেক টাকায় খরচ হয়ে যায়। তাই সব থেকে ভালই আপনি যে এজেন্স এর মাধ্যমে যাবেন তাদের থেকে সকল তথ্য জেনে নেওয়া।

আমেরিকা মাল্টিপল ভিসা কি

আপনি আমেরিকা ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন আবার ভবনকালীন সময় আপনাকে দেশেও আসতে হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে ধরুন আপনি বাংলাদেশে রয়েছেন এবং বাংলাদেশে থেকে আপনি আমেরিকা একটি মিটিং করতে যাবেন, আপনার অফিসের কাজে যাবেন কিংবা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে কোন হিসাব করতে যাবেন।

আমেরিকা গিয়ে আপনাকে দুইদিন এসব কাজ করতে হবে তারপরে আপনাকে আবার বাংলাদেশে এসে মিটিংয়ে জয়েন করতে হবে। তারপরে আবার পরের মাসে নাকি আবার আমেরিকা যেতে হবে বিভিন্ন কাজে। তাহলে আপনি আমেরিকা যাবেন যতবার ঠিক ততবারই কি আপনাকে ভিসা করতে হবে?

আসলে বিষয়টি এরকম নয় কারণ মাল্টিপল নামে একটি ভিসা রয়েছে যে ভিসার মাধ্যমে আপনি একটি দেশে বারবার যেতে পারবেন আপনাকে বার বার আর ভিসা করতে হবে না। আপনি যদি আমেরিকা মাল্টিপল ভিসা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করে দেন তাহলে আপনি ওই সময়ের মধ্যে যতবার ইচ্ছা ততবার আমেরিকার যাতায়াত করতে পারবেন আপনাকে বারবার আর ভিসা করা লাগবে না।

কানাডার মাল্টিপল ভিসা কি

কানাডার মাল্টিপল ভিসা যদি আপনি করে নেন তাহলে আপনি ওয়েব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কানাডায় যোগাযোগের ইচ্ছা ততবার যেতে পারবেন আপনাকে আর বারবার ভিসা করতে হবে না। অনেকে কিন্তু কানাডায় বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জনের জন্য যেতে চাই আবার গুরুত্বপূর্ণ কাজে দেশে আসতে হয় সেক্ষেত্রে যাদের এরকম পরিস্থিতি হয়েছে তারা চাইলে কানাডার মাল্টিপল ভিসা করতে পারেন।

দুবাই মাল্টিপল ভিসা কি

দুবাই যারা যায় ভ্রমনের জন্য গিয়ে থাকে। মনে করুন আপনি একজন ব্যবসায়ী, আপনার ছেলে দুবাই থাকে। দুবাইয়ে আপনার ছেলেদের ব্যবসা আছে এবং বাংলাদেশে আপনার ব্যবসা রয়েছে। এখন আপনার ছেলে খুব অসুস্থ হয়ে গিয়েছে যার কারনে সে ব্যবসা ঠিক মতো পরিচালনা করতে পারছে না। তাহলে এখন আপনি কি করবেন?

আপনাকে আপনার ছেলের দুবাইয়ের যে ব্যবসার হয়েছে সেটাও পরিচালনা করতে হবে আবার আপনার বাংলাদেশে যে ব্যবসার রয়েছে সেটাও আপনাকেই পরিচালনা করতে হবে। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এক সপ্তাহ দুবাই এবং এক সপ্তাহ বাংলাদেশের থাকা লাগবে আপনার। তাহলে আপনি যতবার দুবাই যাবেন ততবার কি ভিসা করবেন?
না মোটেও এরকম নয়, যাদের এরকম একই দেশে বারবার যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তাদের জন্য রয়েছে মাল্টিপল ভিসা। মনে করুন দুবাই এর জন্য আপনি এর জন্য আপনি তিন মাসের মাল্টিপার ভিসা করলেন তাহলে এই তিন মাসের মধ্যে আপনি যতবার যাবেন তার জন্য আর বারবার আপনাকে ভিসা করার প্রয়োজন পড়বে, আপনি শুধুমাত্র ফ্লাইট খরচ দিয়ে দুবাই চলে যেতে পারবেন।

সৌদি আবর মাল্টিপল ভিসা

সৌদি আরবের ক্ষেত্রেও ঠিক একই রকম, আপনি যদি সৌদি আরবের জন্য মাল্টিপল ভিসা করেন তাহলে আপনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যতবার ইচ্ছা ততবার সৌদি আরবের যাতায়াত করতে পারবেন আপনাকে আর অতিরিক্ত ভাবে বারবার ভিসা করা লাগবেনা। আমার এক আত্মীয় রয়েছে যার সৌদি আরবে মোবাইলের শোরুম রয়েছে।

সেই প্রতি ২ মাসেই একবার করে বাড়িতে আসে। তবে তাকে জিজ্ঞেস করল আপনি যে এতবার বাড়িতে আসেন তাহলে অন্তত খরচ অনেক টাকা হয় এবং বারবার এই ভিসা করার ঝামেলায় জড়াতে হয়। সে বলল না, বিষয়টি এরকম নয়। সৌদি আরব মাল্টিপল ভিসা রয়েছে যার মাধ্যমে আমি যতবারই দেশে আসি প্রতিবারে আমাকে আর ভিসা করা লাগে না। একবার মাল্টিপল ভিসা করেছি এখন বারবার আসবো।

ইন্ডিয়ান মাল্টিপল ভিসা

যারা ইন্ডিয়ান মাল্টিপল ভিসা মূলত তারাই করে যারা ব্যবসা এবং চিকিৎসা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ইন্ডিয়া যায়। বাংলাদেশে এরকম অনেক জিনিস রয়েছে যেগুলোর দাম অনেক বেশি ইন্ডিয়ার তুলনায়। সে ক্ষেত্রে যারা ব্যবসা করে তারা বাংলাদেশ থেকে ক্রয় না করে ইন্ডিয়া থেকে সেগুলো ক্রয় করে বাংলাদেশে বেশি দামে বিক্রি করতে পারে।

যারা এরকম ক্রয় বিক্রয় করে অতি কিছু ক্ষেত্রে তারাই কিন্তু ইন্ডিয়ান মাল্টিপল ভিসা করে নেয়। বাংলাদেশ থেকে যেহেতু ইন্ডিয়ার ট্রেন চলাচলের সুযোগ সুবিধা রয়েছে তাই তারা মাল্টিপল ভিসা করার মাধ্যমে ইন্ডিয়া থেকে যেকোনো পণ্য ক্রয় করে ট্রেনের মাধ্যমে বাংলাদেশ চলে আসে। এতে যারা এ ধরনের ব্যবসায়ী রয়েছে তারা অনেক লাভবান হচ্ছে।

আবার অন্য দেখে মনে করুন আপনি এমন একটি রোগে অসুস্থ হয়ে গেছেন যে রোগের চিকিৎসা বাংলাদেশে ভালো নেই কিংবা বাংলাদেশে করতে গেলে অতিরিক্ত টাকা খরচ হবে। সেক্ষেত্রে অনেকেরই প্রথম পছন্দ থাকে ইন্ডিয়া গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া। যদি বিষয়টি এরকম হয় যে আপনাকে ইন্ডিয়ার একজন ডাক্তার দেখেছে এবং এক মাস পরে আবার তার কাছে আসতে বলেছে।

এখন আপনি যদি হিসাব করে দেখেন যে এক মাস আপনার ইন্ডিয়ায় থাকতে যে টাকা খরচ হবে ওই টাকা দিয়ে আপনি অনায়াসে মাল্টিপল ভিসা করে নিতে পারবেন তাহলে বিষয়টি কেমন হয়? আবার ইন্ডিয়ায় থাকলে থাকা খাওয়া অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে বিভিন্ন ঝামেলার সৃষ্টি হতে পারে।

কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে আপনি যদি ইন্ডিয়ান মাল্টিপল ভিসা দেন তাহলে আপনি ডাক্তার দেখিয়ে বাংলাদেশে চলে আসতে পারবেন এবং এক মাস পরে আবার ইন্ডিয়া গিয়ে আপনার ডাক্তারকে দেখাতে পারবেন।

ডাবল এন্ট্রি ভিসা মানে কি

ডাবল এন্ট্রি ভিসা মানে হল যে কোন দেশে দুইবার প্রবেশের সুযোগ। ডাবল এন্ট্রি ভিসা মূলত একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করা হয়ে থাকে। মনে করুন আপনি একটি দেশের জন্য ছয় মাসের ডাবল এন্ট্রি ভিসা করেছেন তাহলে ওই ছয় মাসের মধ্যে আপনি সর্বোচ্চ দুইবার ওই দেশে প্রবেশ করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে অতিরিক্ত ভাবে আর বারবার ভিসা করা লাগবে না।

ডাবল এন্ট্রি ভিসা ইন্ডিয়া

বিষয়টি একই রকম, আপনি যদি ডাবল এন্ট্রি ভিসা ইন্ডিয়ার করেন তাহলে আপনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আর অতিরিক্তভাবে ভিসা করা ছাড়াই দুইবার ইন্ডিয়া যেতে পারবেন। বিশেষ করে চিকিৎসার জন্য এ ধরনের ভিসা সব থেকে বেশি ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে রিপোর্ট দেখানোর জন্য চিকিৎসকেরা এই ইন্ডিয়ার ডাবল এন্ট্রি ভিসা করে নেয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪