থার্মোমিটারের পারদ খেলে কি হয়, পারদ খাওয়ার উপকারিতা জানুন। ক্ষতিকর দিক, খাওয়ার নিয়ম, পারদ হাতে লাগলে কি হয়, পারদ শোধন করার নিয়ম কি
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন থার্মোমিটারের পারদ খেলে কি হয় এবং
পারদ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। তাই আপনি যদি এই সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে থাকেন
তাহলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়বেন। অনেকেরই কিন্তু এই পারদ সম্পর্কে ভুল ধারণা
থাকে, তাই আপনার উচিত এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা গ্রহণ। চলুন বাড়তি কথা না বলে জেনে
নেওয়া যাক থার্মোমিটারের পারদ খেলে কি হয় ও পারদ খাওয়ার উপকারিতা গুলো।
যেহেতু এটি একটি তথ্যমূলক আর্টিকেল তাই আপনার উচিত তাড়াহুড়া না করে পড়া।
সামান্যতম ভুল বোঝার কারণে আপনি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। আর যেহেতু
পারদের ক্ষতিকর দিক রয়েছে তাই আপনারা শুধুমাত্র পারদ খাওয়ার উপকারিতা দেখেই
খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিবেন না। চলুন আমাদের মূল আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ থার্মোমিটারের
পারদ খেলে কি হয় জেনে নেওয়া যাক।
পারদ+কেন+খায়। পারদ খাওয়ার উপকারিতা
আপনি হয়তো অনেক সময় শুনে থাকবেন যৌন সমস্যার মহসমাধান হলো পারদ খাওয়া। বিশেষ
করে কবিরাজ বা অন্যান্য অজ্ঞ ব্যক্তিরা আপনাকে বলবে যে আপনি যদি পারদ খান তাহলে
পারদ খাওয়ার উপকারিতা হিসাবে আপনার সকল জটিল ও কঠিন যৌন রোগ ভালো হয়ে যাবে। আবার
যাদের সন্তান হয় না তাদের রিকমেন্ড করা হয়ে পারদ খাওয়ার জন্য।
কিন্তু বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে শোধন না করে পারদ খাওয়ার
কোন প্রকার উপকারিতা নেই বরং এটি খেলে আপনি মারাত্মক বিপদের মধ্যে পড়তে পারেন
এবং স্বাস্থ্যঝুকি দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ থার্মোমিটার ভেতরে পারদ যে অবস্থায়
থাকে ওই অবস্থাতেই আপনি যদি সেবন করেন তাহলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে
পারে।
আর আপনি যদি পারদ শোধন করার নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে নিচের অংশ থেকে জেনে
নেবেন। যেহেতু শোধন করা অনেক কঠিন যা অনেকেই পারে না, তাই আপনি যদি এই ঝুকির কাজ
না করতে চান সেক্ষেত্রে যারা শোধন করতে পারে সেইসব কবিরাজের মাধ্যমে শোধন করে
নিবেন। এক কথায় আপনি যদি পারদ খাওয়ার উপকারিতা জানতে চান তাহলে জেনে রাখুন যৌন
বিষয়ের সবচেয়ে খারাপ রোগ হল ধজভঙ্গ বা লিঙ্গ উত্থান ত্রুটির জন্য পারদের চেয়ে আর
ভালো কোন জিনিস নেই।
যারা দীর্ঘদিন যাবত কবিরাজি করে এবং মানুষের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে
হাকিমের চিকিৎসা প্রদান করে আসছে তাদের বর্ণনা মতে যদি কারো এ ধরনের রোগ থাকে
তাহলে তার জীবনের সর্বশেষ চিকিৎসা হিসাবে শোধনকৃত পারদ খেতে হবে। অর্থাৎ পারদ
খাওয়ার মাধ্যমে যদি তার সমস্যা দূর না হয় তাহলে পৃথিবীতে তার জন্য আর কোন
চিকিৎসা নেই।
থার্মোমিটারের পারদ খেলে কি হয়। পারদের ক্ষতিকর দিক
আপনি যদি সরাসরি থার্মোমিটারের পারদ খেয়ে ফেলেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পারদ এর
ক্ষতিকর দিক গুলো দেখা দেবে। যেহেতু পারদ একটি ধাতু এবং এটি একটি মৌল তাই এটি
সরাসরি খেয়ে ফেললে আমাদের শরীরের সাথে বিরূপ প্রভাব দেখা দিতে পারে। এর
রাসায়নিক সংকেত হচ্ছে "Hg" বা মার্কারি।এর পারমাণবিক ভর হল ৮০ এবং এটি স্বাভাবিক
চাপ ও তাপমাত্রায় তরল অবস্থায় থাকে।
থার্মোমিটারের পারদ খেলে কি হয় তা নিম্নরূপঃ
- বিষক্রিয়া
- পাকস্থলীর ক্ষতি
- কিডনির ক্ষতি
- পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতি
- যৌন দূর্বলতা
- মানসিক ক্ষতি
- ফুসফুসের ক্ষতি
- জরায়ুর ক্ষতি
যেহেতু এটি একটি বিষাক্ত ধাতু তাই আপনি যদি এটি সরাসরি খেয়ে ফেলেন তাহলে পারদের
ক্ষতিকর দিক হিসাবে তৎক্ষণাৎ পাতলা পায়খানা, মাথাব্যথা, কিডনিতে ব্যথা,
শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তো আশা করি জানতে পেরেছেন থার্মোমিটারের
পারদ খেলে কি হয়। তাই আপনারা কখনোই শোধন না করে থার্মোমিটারের পারদ খাবেন না।
পারদ খাওয়ার নিয়ম। পারদ শোধন করার নিয়ম
পারদ যেহেতু একটি মৌল এবং বিষাক্ত ধাতু তাই এটি খেতে হলে আপনাকে অবশ্যই শোধন করতে
হবে। আর আপনি যদি পারদ শোধন করার নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে এই অংশটুকু মনোযোগ
সহকারে পড়তে থাকুন। তবে যেহেতু এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং সাম্যতম ভুলের
কারণে আপনার স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে তাই রিক্স না নিতে চাইলে যারা
প্রফেশনালি শোধন করে থাকে তাদের থেকে ক্রয় করে খাওয়ায় উত্তম।
পারদ শোধন করার নিয়ম কি
থার্মোমিটারের পারদ শোধন করে খাওয়ার নিয়ম কি এ পারদ ধাতু খাওয়ার নিয়ম কি এ
সম্পর্কে অনেকেই কিন্তু জানতে চাই। তো তাদের সুবিধার্থে আমাদের আজকের এই অংশে
বিস্তারিত আলোচনা করা হবে তাই আপনি যদি এই সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন
তাহলে মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন এবং পদ্ধতি জেনে নিন।
একটি মানুষের জন্য সাধারণত অর্ধ তোলা বা ৫ গ্রামের বেশি পারদ খাওয়া যাবে না বা
উচিত হয়। তাই আপনারা কিভাবে কিংবা কি কি উপাদানের সাথে মিশ্রণ করে ৫ গ্রাম পারদ
শোধন করবে সেই পদ্ধতি জানানো হবে।
পারদ শোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ
- পানের বোটার রস ৫ গ্রাম
- ৫ গ্রাম ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা
- ৩ গ্রাম মধু
- ৩ বছরের কম বয়সী নিম গাছের মূলের ছাল
পারদ শোধন করার নিয়ম নীতি
উপাদানগুলো মেপে নেওয়ার পরে প্রথমে পানের বোটার রস নিম মূলের ছালের সাথে
ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর মিনিমাম ৩০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর
এলোভেরার মধ্যে মধু দিয়ে ভালোভাবে তরল করে নিতে হবে। এই চারটি উপাদান ভালোভাবে
মিশ্রণ করার পরে পারদ দিতে আবার নাড়ানাড়ি করতে হবে। আর আপনার কাছে যদি ছোট
বেলেন্ডার মিশিন থাকে কম স্পিড দিয়ে ৫ মিনিট চালাতে হবে। এই কাজটুকু আপনি যদি
পরিপূর্ণভাবে করতে পারেন তাহলে আপনি ইতিমধ্যে পারদ শোধন করে ফেলেছেন। আশা করি
জানতে পেরেছেন পারদ শোধন করার নিয়ম সম্পর্কে।
পারদ হাতে লাগলে কি হয়
আপনার হাতে যদি কোন প্রকার কাটা বা ক্ষত না থাকে তাহলে পারদ হাতে লাগলে কিছুই
হবে না। কারণ পারদ সাধারণত আমাদের ত্বকের সাথে কোন প্রকার বিক্রিয়া করে না।
কিন্তু আপনি যদি অন্য কোন ধাতুর সাথে অর্থাৎ যেসব ধাতুর সাথে এটি বিক্রিয়া করে
ওইসব ধাতুর উপরে রাখা মাত্রই ওই ধাতুটি গলে যাবে। তাই সাধারণত আমাদের হাতে
কিংবা ত্বকে পারদ রাখলে কিছুই হবে না।
সোনায় পারদ লাগলে কি হয়
সোনায় পারদ রাখলে সোনার কালার নষ্ট হয়ে যায় এমনকি সোনার উপরে দাগ পড়তে পারে।
তবে অবাক করা তথ্য হলো সোনা উত্তোলনের সময় এই পারদ ব্যবহৃত হয়।
ব্যক্তিগত মতামত
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে থার্মোমিটারের পারদ খেলে কি হয়, পারদ খাওয়ার
উপকারিতা, পারদ শোধন করার নিয়ম কি এবং অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা
হয়েছে। আশাকরি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আর এই সম্পর্কে
আপনার যদি কোন মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। এছাড়া অন্যান্য
ক্যাটাগরির পোস্ট পড়তে আমাদের হোম পেজ ভিজিট করে পড়তে পারবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url