শাওমি সকল বাটন মোবাইল দাম ২০২৫ ও শাওমির ইতিহাস
আপনি যদি শাওমি মোবাইলের ইতিহাস এবং শাওমি বাটন মোবাইল দাম জানতে চান তাহলে এই
আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে শাওমি মোবাইল কোম্পানি কিভাবে
শুরু হয়েছিল এবং তার উৎপত্তি কিভাবে হলো সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। আর
যেহেতু শাওমি তাদের বাটন মোবাইল লঞ্চ করেছে তাই আপনারা শাওমি বাটন মোবাইল দাম
জানতে পারবেন।
অনেই ক্ষেত্রে মোবাইলটি বাদ দিয়ে কিন্তু বাটন মোবাইলের প্রয়োজন হয়। আর শাওমি
যেহেতু একটি জনপ্রিয় মোবাইল কোম্পানি তাই কিন্তু অনেকেই শাওমির বাটন মোবাইল
কিনতে চাই। যেহেতু এটি বাজারে বেশি নতুন তাই অনেকেই এর দাম জানে না। যদি এই
মোবাইলটি কিনতে চান তাহলে মার্কেটে যাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে
শাওমি বাটন মোবাইল দাম কত টাকা।
চিনের শাওমি বাটন মোবাইল কোম্পানির উৎপত্তি কিভাবে হল
শাওমি মোবাইল কোম্পানি কিন্তু বেশ একটি নতুন কোম্পানি। শাওমি মোবাইল কোম্পানি
যখন বাজারে এসেছিল তখন কিন্তু বেশ অনেকগুলো ব্র্যান্ড তাদের মোবাইল কোম্পানির
জগতে বেশ রাজত্ব করে চলছিল। তখন samsung, ওয়ান প্লাস, সনি, অ্যাপল ও অন্যান্য
কোম্পানির বিভিন্ন মোবাইল বাজারে বেশ ভালোভাবেই চলছিল।
এই কম্পিটিশনের যুগে ২০১০ সালের ৬ জুন চীনের বেইজিং শহরের LEI JUN এবং তার ৬ জন
কো ফাউন্ডার মিলে xiaomi নামে একটি মোবাইল কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করেন। এখন
যেহেতু ২০২৫ সাল তাই মাত্র ১৫ বছরে তারা এরকম জনপ্রিয় হয়ে উঠবে সেটা তাদের
ধারণাতেও ছিল না। ২০১০ সালের সময় কিন্তু অনেক মোবাইল কোম্পানি জনগণের কাছে
বেশি জনপ্রিয় ছিল।
কিন্তু এরকম কম্পিটিশনের যুগে যদি মার্কেটে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে হয় তাহলে
ইউনিক কিছু করতে হবে, আর সেই ধারণা থেকেই শাওমি আজকের এই পর্যায়ে। তারা চিন্তা
করে দেখল মার্কেটে যেসব কোম্পানির মোবাইলটিতে রয়েছে সেগুলোর ফিচার অনুযায়ী
দাম তুলনামূলক বেশি। আর আমরা যদি এরকম ফিচার দিয়ে দাম কম রাখি তাহলে শুধুমাত্র
জনগণ আমাদের মোবাইল কিনবে।
তাই তারা কম দামে বেশি ফিচার যুক্ত মোবাইল বাজারে লঞ্চ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করে। আসলে মার্কেট যত কম্পিটিটিভ হোক না কেন যদি ইউনিক ধারণা নিয়ে কাজ করা
যায় তাহলে যেগুলো পরিস্থিতিতে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। যার উদাহরণ হলো শাওমি
মোবাইল কোম্পানি। তারা কোম্পানিতে প্রতিষ্ঠা করার পরে প্রথম ফোন লঞ্চ করার পর
থেকেই রেংকে গিয়ে চলে আসে। কারণ তাদের মূল লক্ষ্য ছিল প্রিমিয়াম মোবাইল কম
দামে গ্রাহকদের হাতে হাতে পৌঁছে দেওয়া।
Xiaomi কোম্পানি ২০১১ সালের ১৬ ই আগস্ট তাদের প্রথম মোবাইল mi 1 লঞ্চ করে। এই
মোবাইলটির স্পেসিফিকেশন ছিল ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, 4gb ইন্টার্নাল স্পেস,
১৯৩০ মিলি এম্পিয়ারের ব্যাটারি, আট মেগাপিকেল ক্যামেরা, এক জিবি র্যাম। এবং
এই মোবাইলটির ওজন ছিল মাত্র ১৪৯ গ্রাম।
ওই সময় এরকম ফিচারে কম দামে একটাও মোবাইল বাজারে ছিল না। যার ফলে প্রথম থেকেই
এই কোম্পানিটির জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করে ফেলে। এবং তারা যেটা করেছিল
তারা বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই এই মোবাইলটি রপ্তানি করেছিল। যার ফলে পুরো
পুরো পৃথিবীতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে শাওমি মোবাইলের নাম মানুষ জেনে যায়।
তারপর থেকেই মূলত শাওমির জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে। আপনি বলুন মানুষ কেন এই
কোম্পানির মোবাইল কিনবে না? যেরকম স্পেসিফিকেশন রয়েছে অন্যদিকে দামও কম। আর
সেসময় বাজারে যেসবমোবাইল ছিল সেগুলোর দাম অনেক বেশি ছিল।
ঠিক তার এক বছর পরে 2012 সালের আগস্ট মাসের তারা সাওমির দ্বিতীয় মোবাইল mi 2
বাজারে লঞ্চ করে। মূলত এই ফোনের যে ডিজাইন ছিল সেটা ছিল অসাধারণ। এই ফোনটির
স্পেসিফিকেশন ছিল এন্ড্রয়েড ভার্সন ৪.১, ইসলাম ড্রাগন s4 pro, ips display যার
সাইজ ছিল ৪.৩''।
এছাড়া পিছনের ক্যামেরা ছিল ৮ মেগাপিক্সেল এবং সামনের ক্যামেরা ছিল দুই
মেগাপিক্সেল। ইন্টার্নাল স্টোরেজ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ১৬ জিবি অথবা ৩২ জিবি।
অর্থাৎ দুইটি ভেরিয়েন্ট এ বাজারে লঞ্চ করা হয়েছিল আপনার যেটি প্রয়োজন হবে
আপনি সেটি নিতে পারবেন কোন সমস্যা হবে না।
১৬ জিবি নিলে দাম কম আর ৩২ জিবি নিলে দাম বেশি। এছাড়া এটি ram ছিল 2gb এবং
ব্যাটারি 2000 মিলিম্পিয়ার। এই মোবাইলের ওজন ছিল মাত্র 145 গ্রাম, যেটা ওই
সময় বেশ লাইট ওয়েটেরমোবাইল ফোন বলা চলে। আর যেহেতু ডিজাইন অনেক সুন্দর ছিল
তাই এমনিতেই মানুষ ডিজাইন দেখেই এই ফোনটি পছন্দ করে নিত।
এই মোবাইলটি মাত্র ১১ মাসে ১০ মিলিয়ন ইউনিট বিক্রি হয়। আপনি কি ধারণা করতে
পারছেন যে 2010 সালে যে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেই কোম্পানিটি কিভাবে
মাত্র দুই বছরের মাথায় একটি মডেলের ১০ মিলিয়ন ইউনিট বিক্রি করতে পারে। যেরকম
ছিল তাদের প্রোডাক্ট সে রকমই ছিল তাদের মার্কেটিং যার ফলে খুব সহজে তারা সফলতা
পেয়ে গেছে।
এই সফলতা অর্জনের পরে এন্ড্রয়েডের জগতে স্মার্টফোনের দিক দিয়ে শাওমি
কোম্পানির নাম প্রথম এক নাম্বারে চলে আসে। যেহেতু চায়নাবাদে অন্যান্য জায়গায়
তারা অনলাইনের মাধ্যমে স্মার্টফোন বিক্রি করতো। তাই তারা একটি পরিকল্পনা
বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়, সেই পরিকল্পনাটি হলো তারা দেশের বাইরে দুই
হাজারটি শাওমি কোম্পানির ফিজিক্যালি শোরুম দিবে।
সেই ধারণা থেকে তারা চায়নাবাদে গ্লোবাল ওয়ার্ডে ফিজিকালি প্রবেশ করে এবং
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে ফেলে। তারপরে ইন্ডিয়াতে একটি বিশাল ঘটনা
ঘটে যায়, ইন্ডিয়ার জনপ্রিয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট ফ্লিপকার্ট শাওমির নতুন
মোবাইল mi 4 এর বিক্রির পোস্ট করার মাত্র ৪ সেকেন্ডে এক লক্ষ ইউনিট সোল্ড আউট
হয়ে যায়।
এরপর থেকে শাওমি কোম্পানিকে আর কোনদিনই পিছে ফিরে তাকানো লাগে নাই। তাদের এই
অগ্রযাত্রায় তাদের একাগ্রতা এবং প্রোডাক্ট সম্পর্কে সচেতনতাই মূল সফলতা এনে
দিয়েছে। তাদের এই আকাশচুম্বী সফলতার কারণে তারা আরো নতুন নতুন পরিকল্পনা হাতে
নেই এবং মোবাইল ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন প্রোডাক্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নেই।
সিদ্ধান্ত থেকে ২০১৪ সালে তারা বিভিন্ন ইলেকট্রিক পণ্য যেমন টিভি, ফ্রিজ, এসি,
স্কুটার, ফ্যান, ল্যাপটপ, ওভেন, রাউটার, প্রিন্টার, লাইট, সিসি ক্যামেরা,
ল্যাম্পপোস্ট ইত্যাদি বানানো শুরু করে। তখন তাদের কোম্পানির এমন একটি ভাব শুরু
হয়ে গেছিল যেন শাওমির যে কোন প্রোডাক্ট মানেই প্রোডাক্ট মানে একটি প্রিমিয়াম
ফ্লেভার।
এভাবে চলতে শুরু করলে ২০১৭ সালে শাওমি কোম্পানির মার্কেট শেয়ার চলে আসে 67%।
এরপর তারা শাওমি বাটন মোবাইল লঞ্চ করে এবং ২০২০ সালে তারা মোট মোবাইল সেল করে
১৪৬.৩ মিলিয়ন। এরকম ভাবে চলতে শুরু করলে তারা ধীরে ধীরে শাওমি বাটন মোবাইল লঞ্চ
করার পরিকল্পনা নেয়। কারণ মানুষদের স্মার্টফোনের পাশাপাশি অনেক সময় বাটন
মোবাইলের দরকার হয়।
শাওমি বাটন মোবাইল দাম
যারা আর্টিকেলের উপরের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা হয়তো ইতিমধ্যে
বুঝতে পেরেছেন যে বিশ্বব্যাপী শাওমি মোবাইল কোম্পানির কিরকম জনপ্রিয়তা রয়েছে।
আর এরকম জনপ্রিয় কোম্পানি যখন একটি বাটন মোবাইল ডিজাইন করে তাহলে সেটি কিরকম
হবে তা বুঝতে পারছেন আশা করি।
শাওমি কোম্পানি প্রথম বারের মত বাটন মোবাইল লঞ্চ করে ২০১৮ সালে। তারা
প্রথমবারের মতো Xiaomi Qin 1s বাজারে নিয়ে আসে। Xiaomi Qin 1s এর দাম ও
স্পেসিফিকেশন সম্পর্কের নিচে বলা হয়েছে। আপনি যদি শাওমি বাটন মোবাইল দাম জানতে
চান তাহলে নিচের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। এভাবে প্রত্যেক মডেলের দাম
এবং স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে জানানো হবে।
Xiaomi Qin 1s। শাওমি বাটন মোবাইল দাম
ডাইমেনশন: ১৩২ x ৫৩.৮ x ৮.৫ মিমি
ওজন: ১০৫ গ্রাম
বডি: প্লাস্টিক
ডিসপ্লে: আইপিএস এলসিডি
চিপসেট: MediaTek MT6260A
র্যাম: ২৫৬MB
ইন্টার্নাল স্টোরেজ: ৫১২MB
ব্যাটারি: ১৪৮০ mAh
দাম: ২জি এর দাম ২৯৫০ টাকা এবং ৪জি এর দাম ৩৯৫০ টাকা
Xiaomi Qin AI 4G। শাওমি বাটন মোবাইল দাম
ডাইমেনশন: 132 x 53.8 x 8.5 মিমি
ওজন: 105 গ্রাম
বডি: প্লাস্টিক নির্মাণ
সিম: ডুয়াল সিম (ন্যানো সিম, ডুয়াল স্ট্যান্ড-বাই)
নেটওয়ার্ক: 2G, 3G, 4G LTE
AI Voice Assistant: অন্তর্ভুক্ত
ইন্টারনেট ব্রাউজিং: সাপোর্ট করে
রঙ: সাদা এবং কালো
দামঃ ৪৬০০ টাকা
Xiaomi Qin 1S+। শাওমি বাটন মোবাইল দাম
ব্র্যান্ড: Xiaomi
মডেল: Qin 1S Plus
দাম: ৪,৯৯০ টাকা
প্রকাশিত: ২০২২ সালে
ব্যাটারি: ১৪৮০ mAh
ডিসপ্লে: ২.৮ ইঞ্চি
নেটওয়ার্ক প্রকার: 2G, 3G, 4G
সিম: ন্যানো সিম
ওজন: ২০০ গ্রাম
পেছনের ক্যামেরা নেই
সামনের ক্যামেরা নেই
RAM: ৫১২ এমবি
ROM: ৪ জিবি
ব্যাটারি : ১৪৮০ mAh
Xiaomi Qin F21 Pro। শাওমি বাটন মোবাইল দাম
রিলিজ: আগস্ট ২০২১
অপারেটিং সিস্টেম: Android ১১
চিপসেট: Mediatek MT6761 Helio A22 {১২ ন্যানোমিটার}
RAM: ৩GB/৪GB
ROM: ৩২GB/৬৪GB
ভ্যারিয়েন্ট: ৩GB/৩২GB ও ৪GB/৬৪GB
ব্যাটারি: ২১২০ mAh
দাম: ৩GB+৩২GB - ১৬,০০০ টাকা
Xiaomi Qin F22 Pro। শাওমি বাটন মোবাইল দাম
পিছনের ক্যামেরা: ৮MP
সামনের ক্যামেরা: ২MP
অপারেটিং সিস্টেম: Android 12
RAM: 4GB
ROM: 64GB
ব্যাটারি: Li-Po ২১৫০ mAh
বাংলাদেশে দাম: ২৬,০০০ টাকা
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url