ডিসোপ্যান ১ ও 0.5 খেলে কি হয়, ডিসোপ্যান কি ঘুমের ওষুধ নাকি। ডিসোপ্যান ০.৫ বেশি খেলে কি হয়, দাম

প্রিয় পাঠক, আপনি কি ডিসোপ্যান ১ খেলে কি হয়, ডিসোপ্যান 0.5 খেলে কি হয়, ডিসোপ্যান কি ঘুমের ওষুধ এবং ডিসোপ্যান ০.৫ বেশি খেলে কি হয় এই সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন তাহলে জানতে পারবেন ডিসোপ্যান ১ খেলে কি হয় এবং এই সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্যগুলো।

যেহেতু এটি একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল তাই আপনার উচিত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকা। বিশেষ করে স্বাস্থ্য বিষয় নিয়ে যখন আপনি কোন তথ্য জানবেন তখন চেষ্টা করবেন সেটি পরিপূর্ণ জানা এবং এফেক্ট বুঝে নেওয়া। তাই আপনি যখন আর্টিকেলটি পড়বেন তখন বিশেষ করে ডিসোপ্যান ১ খেলে কি হয় এবং ডিসোপ্যান কি ঘুমের ওষুধ কিনা তা অবশ্যই জেনে নিবেন। চলুন বাড়তি কথা না বলে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।

আমাদের কাছে কিন্তু অনেকেই এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তাই সকলের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই অংশে ট্যাবলেটের কার্যকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানানো হবে। সোজা কথাই বলতে গেলে যে কোন ট্যাবলেটের কার্যকারিতা নির্ভর করে এর উপাদানের উপরে। তাই চলুন প্রথমে উপাদান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ডিসোপ্যান মূলত একটি ডায়াজেপাম গ্রুপের ঔষধের অন্তর্ভক্ত, যেটি বেনজোডায়াজেপিন শ্রেণীর আওতাধীন। যার ফলে এই ওষুধের বেশ কিছু কার্যকারিতা রয়েছে। যারা জানতে চাচ্ছিলেন ডিসোপ্যান ১ খেলে কি হয় তারা জেনে নিন ডিসোপ্যান ১ খেলে এটি প্রথমত ঘুম আনতে সাহায্য করবে।

অর্থাৎ এই ট্যাবলেট টি সেবনের কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনি ঘুমিয়ে যাবেন। এছাড়াও এর বেশ কিছু কার্যকারিতা রয়েছে যেমনঃ মনের ভয় দূর করে, অ্যাংজাইটি দূর করে, মাংসপেশির খিচুনি দূর করে, পেশি শিথিলতা দূর করে। অর্থাৎ আপনি যদি শান্ত ও রিলাক্স অনুভব করতে চান তাহলে ডিসোপ্যান সেবন করতে পারেন।

তবে এসব কার্যকারিতা দেখে কখনোই এটি সেবন করা উচিত নয় কারণ প্রত্যেকটি ওষুধের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই এই ধরনের ঔষধ সেবনের পরে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশনা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।

ডিসোপ্যান এর কয়েকটি মাত্রা রয়েছে, যেমনঃ ডিসোপ্যান ০.৫ মিলিগ্রাম, ১ মিলিগ্রাম, ২ মিলিগ্রাম, ৫ মিলিগ্রাম ও ১০ মিলিগ্রাম। চিকিৎসকেরা রোগের ধরন এবং রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির হিসেবে উপযুক্ত মাত্রা সেবনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে। তবে আপনার জন্য কোনটি ভালো হবে এটা শুধুমাত্র চিকিৎসকেরাই বলতে পারবেন।

ডিসোপ্যান এর মাত্রা যতই হোক না কেন সব ট্যাবলেট এর কার্যকারিতা মূলত একই। তবে মাত্রার সাপেক্ষে কার্যকারিতার ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। প্রকৃতপক্ষে ০.৫ মিলিগ্রামের একটি ঔষধ খেলে যা ফলাফল পাওয়া যাবে, ঠিক একই ফলাফল পেতে হলে আপনাকে ১ মিলিগ্রাম ট্যাবলেটের অর্ধেক খেতে হবে।

আবার একইভাবে ২ মিলিগ্রামের একটি ট্যাবলেটের কার্যকারিতা যা হবে ঠিক একই কার্যকারিতা আপনি পেয়ে যাবেন যদি ১ মিলিগ্রামের দুইটি ট্যাবলেট খান। অনুরূপভাবে ১০ মিলিগ্রামের একটি ট্যাবলেট এর কার্যকারিতা যেমন হবে ৫ মিলিগ্রামের দুইটি ট্যাবলেটের কার্যকারিতা হবে।

তবে আপনারা কখনোই অনুমান করে এ ধরনের ট্যাবলেট সেবন করবেন না। যেহেতু এটির বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই ডাক্তারের নির্দেশনা ব্যতীত কখনোই সেবন করা যাবেনা। আর আপনার যদি ঘুমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ অধ্যাপক ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। অনেকে অনিদ্রার কারণে প্রতিনিয়ত ডিসোপ্যান ট্যাবলেট খেয়ে থাকে যেটা মোটেও উচিত নয়। আবার আমাদের কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছে ডিসোপ্যান ০.৫ বেশি খেলে কি হয়? তো সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে তাই শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

ডিসোপ্যান ০.৫ মিলিগ্রাম অথবা ১ মিলিগ্রাম সেবন করলে যা হয় ডিসোপ্যান ২ খেলে একই কার্যকারিতা পরিলক্ষিত হয়। আর উপরে যেহেতু ডিসোপ্যান ১ খেলে কি হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে তাই আশা করি আপনি জানতে পেরেছেন যে ডিসোপ্যান ২ খেলে কি হয়। তাই অতিরিক্ত ভাবে আলোচনা করে আর সময় নষ্ট করলাম না।

আপনি যদি উপরের অংশগুলো থেকে এ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যেই হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে ডিসোপ্যান একটি ঘুমের ওষুধ। তাই যাদের প্রশ্ন ছিল যে ডিসোপ্যান কি ঘুমের ওষুধ নাকি আশা করি তারা জানতে পেরেছেন এটা ঘুমের ওষুধ।

তবে আপনি যদি মনে করে থাকেন যে আপনার ঘুম না আসলেই এই ওষুধ সেবন করবেন তাহলে নিজের বিপদে নিজেই ডেকে নিয়ে আসবেন। এই ধরনের ওষুধ গুলো সেবন করলে ধীরে ধীরে আসক্তিতে পরিণত হয়ে যায়। যারা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ রোগে আক্রান্ত চিকিৎসা করে তাদের সাময়িক ঘুমের জন্য এই ধরনের ঔষধ সেবনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে।

তবে আপনি যদি অত্যাধিক সেনসিটিভ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন যেমনঃ ড্রাইভার, অফিশিয়াল ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব এরকম কাজে অন্তর্ভুক্ত থাকেন তাহলে কখনোই ডিসোপ্যান কিংবা এই জাতীয় ঘুমের ওষুধ সেবন করবেন না।

ডিসোপ্যান ০.৫ বেশি খেলে প্রথম অবস্থায় কিছুই হবে না কিন্তু ধীরে ধীরে বিভিন্ন মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হতে পারে। তাই আপনি যদি মনে করে থাকেন যে এই ধরনের ট্যাবলেট সেবন করলে কিছু হয় না এবং দীর্ঘদিন যাবত সেবন করে থাকেন তাহলে একটা সময় গিয়ে আপনার লাইফ রিস্ক দেখা দিতে পারে।

এ ছাড়া আপনি যদি বেশি পরিমাণে সেবন করে থাকেন তাহলে এটা আসক্তিতে পরিণত হতে পারে। আমাদের দেশে এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা ডিসোপ্যান ০.৫ বেশি খাওয়ার ফলে তারা এটিতে আসক্ত হয়ে নেশায় পরিণত করে ফেলেছে। যার ফলে এটি সেবন না করলে তাদের আর ঘুম আসে না। আবার ডিসোপ্যান ০.৫ সেবন বন্ধ করে দিলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

📌আরো পড়ুন 📌 পিউটন সিরাপ খেলে কি ক্ষতি হয়, উপকারিতা, খেলে কি মোটা হয়

তাই বুঝতে পারছেন শুধুমাত্র ডিসোপ্যান ০.৫ না, এই জাতীয় যত ধরনের ঘুমের ঔষধ রয়েছে সবগুলো যদি আপনি বেশি পরিমাণে সেবন করা শুরু করেন তাহলে ধীরে ধীরে সেগুলো শরীরে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। তাই আপনার যদি ঘুমের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং তার দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ করুন।

যে কোন ওষুধের কার্যকারিতা কিন্তু কতটুকু ভাবে পরিলক্ষিত হবে সেটা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে আপনার খাওয়ার নিয়মের উপরে। তাই আপনি যদি ডিসোপ্যান খাওয়ার নিয়ম না জেনে থাকেন কিংবা অনুসরণ না করেন তাহলে কখনোই এর কার্যকারিতা গুলো লাভ করতে পারবেন না।

ডিসোপ্যান খাওয়ার নিয়ম শিশুদের ক্ষেত্রে, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এবং বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে তারতম্য রয়েছে। হঠাৎ আপনি যদি শিশু হয়ে থাকেন তাহলে একভাবে সেবন করতে হবে, আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন তাহলে আরেকভাবে সেবন করতে হবে এবং বেশি বয়স্কদের জন্য আলাদা নিয়ম রয়েছে। 

শিশুদের ক্ষেত্রে সেবন করানোর জন্য অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞের নির্দেশনা গ্রহণ করতে হবে। আর আপনার বয়স যদি মোটামুটি ১২ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে তাহলে ০.৫ মিলিগ্রাম থেকে ২ মিলিগ্রাম পর্যন্ত দিনে ১টি সেবন করতে পারবেন। আর আপনার বয়স যদি ৪০ বা এর থেকে বেশি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ৫ মিলিগ্রাম থেকে ১০ মিলিগ্রাম দিনে ১টি থেকে ২টি পর্যন্ত সেবন করতে পারবেন। তবে দ্রুত কার্যকারিতা পাওয়ার জন্য একসাথে কখনো একটির বেশি ওষুধ সেবন করবেন না। তার উপরে আপনারা যেহেতু জেনেছেন ডিসোপ্যান কি ঘুমের ওষুধ নাকি তাই অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

ডিসোপ্যান এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলোর মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, শারীরিক দুর্বলতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া, বমি বমি ভাব, সবসময় চোখে ঘুম লেগে থাকা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া ইত্যাদি। তবে চিকিৎসক কর্তৃক নির্দেশিত নিয়মে সেবন করলে এ ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে মোটামুটি রেহাই পাওয়া যাবে। তবে আপনি যদি সাধারণ নিয়মের থেকে অতিরিক্ত সেবন করে ফেলেন তাহলে এসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বাদে অন্যান্য মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।

ডিসোপ্যান ০.৫ মিলিগ্রামের দাম ৮ টাকা পিস, আর যেহেতু এক পাতায় ১০টি ট্যাবলেট থাকে তাই ১ পাতার দাম ৮০ টাকা পাতা। অন্যদিকে এর ২ মিলিগ্রাম মাত্রার এক পাতার দাম ১১৩ টাকা। তবে স্থান পেলে এই দামের তারতম্য দেখা দিতে পারে। তাই আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত ফার্মেসি থেকে ক্রয় করার।

আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি ডিসোপ্যান ১ খেলে কি হয়, ডিসোপ্যান কি ঘুমের ওষুধ নাকি, ডিসোপ্যান ০.৫ বেশি খেলে কি হয় এবং এই এই ঔষধ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এগুলো থেকে যদি সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।