ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, এবার এর ফিতরা কত টাকা। ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না

প্রিয় দ্বীনদার ভাই ও বন্ধু, আপনি কি জানতে চাচ্ছেন ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর নির্দেশনা অনুসারে? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে ফিতরা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই আপনি যদি ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন সম্পর্কে জানতে চান তাহলে মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, এবারের ফিতরা কত টাকা ২০২৫
যেহেতু এটি একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং ইসলামের বিধি এর অন্তর্ভুক্ত তাই একজন মুসলমান হিসেবে আপনার এই দায়িত্ব পালন করা অপরিহার্য। এজন্য আপনাকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে ফিতরা কার উপর ওয়াজিব, এবার ফিতরা কত টাকা, ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না ইত্যাদি বিষয়গুলো। চলুন বাড়তি কথা না বলে মূল আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর নির্দেশনা অনুসারে তা জেনে নেওয়া যাক।

ফিতরা অর্থ কি

ফিতরা শব্দটি ফিতর শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ হল ভেঙে ফেলে। আর এই হিসাবে ফিতরা মানে হলো দুস্থ এবং গরিবদের মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া। ফিতরা হল একজন সামর্থ্যবান মুসলিমদের জন্য ওয়াজিব যা একটি বাধ্যতামূলক এবাদত।

যদি কোন সামর্থ্যবান মুসলমান নির্দিষ্ট পরিমাণ ফিতরা প্রদান করে তাহলে তার আত্মশুদ্ধি অর্জন হয় এবং রোজার মধ্যে ভুল ত্রুটিগুলো মুছে যায়। এ সম্পর্কে বেশ কিছু হাদিস রয়েছে। এটি মূলত রমজানের শেষ অংশে ঈদুল ফিতরের আগে প্রদান করতে হয় যাতে অস্বচ্ছলরা তাদের ঈদ আনন্দের সাথে পালন করতে পারে।

ফিতরা কার উপর ওয়াজিব

এ বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। ফিতরা প্রদান করতে হলে আপনাকে অবশ্যই প্রাপ্তবয়ষ্ক মুসলমান হতে হবে, একজন মুসলমানের উপরে ফিতরা কখনোই ওয়াজিব হবে না। আর ফিতরা আপনার উপরে তখনই ওয়াজিব করা হবে যখন আপনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবেন।

নেশা পরিমাণ বলতে বোঝানো হচ্ছে সাড়ে সাত ভরি সোনা, বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা এরকম সমপরিমাণের অর্থ সম্পদ কিংবা নগদ অর্থ যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে ফিতরা দেওয়া আপনার জন্য ওয়াজিব হয়ে যাবে। তবে যাকাতের ক্ষেত্রে যেরকম এরকম সম্পদ আপনার নিকট এক বছর যাবত থাকা লাগবে কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে এরকম সময়ের কোন বিধি নিষেধ নেই।

অনেকেই মনে করে থাকেন যে প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান যদি রোজা না থাকে তাহলে তার কোন ফিতরা দেওয়া লাগবে না কিন্তু এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। আপনি রোজা থাকেন কিংবা না থাকেন এটা আলাদা বিষয় আর ফিতরা হলো আলাদা বিষয়। আপনি যদি অকারনে রোজা না থাকেন তাহলে তার জন্য আপনাকে আলাদা গুনা পেতে হবে এবং ফিতরা না দেওয়ার জন্য আলাদা গুনা পেতে হবে।

তাই আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন তাহলে অকারনে কখনোই রোজা থাকা বাদ দেবেন না এবং সময় মত ফিতরা প্রদান করবেন। যেহেতু মুসলমান হিসেবে এটি আমাদের উপরে ওয়াজিব করা হয়েছে যেটা ফরজের নিচে হলেও বাধ্যতামূলক। তাই অবশ্যই এই বাধ্যতামূলক কাজটি করবেন আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য।

এখন অনেকে আবার প্রশ্ন করেন যে যদি কেউ ঈদের আগের রাতের দিন মারা যায় তাহলে তার জন্য কি ফিতরা ওয়াজিব হবে? এর উত্তরটি হলো না, যদি কেউ ঈদের আগের দিন রাতে মারা যায় তাহলে তার ওপরে ফিতরা ওয়াজিব থাকবেনা। এই সম্পর্কিত আরেকটি প্রশ্ন হল যদি কোন শিশু ঈদের দিন ফজরের পরে জন্মগ্রহণ করে তার উপরে কি ফিতরা ওয়াজিব হবে?

এর উত্তরটি হলোঃ না, ইসলাম এতটা কঠিন নয় যেটা সাধারণ মানুষের জন্য খুব কষ্টদায়ক হয়ে যাবে। ইসলাম হলো একটি শান্তির ধর্ম যা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত। তবে আপনি অভিভাবক হিসেবে যদি তাদের জন্য ফিতরা প্রদান করতে চান তাহলে ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর তথ্য জেনে দিতে পারেন, এটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত বিষয়।

আরেকটি বিষয় হলো আপনি যদি মনে করেন যে আপনার ক্ষেত্রে আপনি নিজেই দিবেন তাহলে দিতে পারেন। অথবা যে সংসারের প্রধান গুরু দায়িত্ব পালন করছে সে চাইলে একাই তার আওতাধীন সংসার সদস্যদের গুলো একেবারে একসাথে প্রদান করতে পারেন। এটাতে কোন বাধ্যবাধকতা নেই, একভাবে দিলেই হয়।

ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে

আমরা যখনই ফিতরা দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করি তখন কিন্তু আমাদের মাথায় প্রশ্ন আসবে আসলে ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে কিংবা কোন ধরনের মানুষদেরকে ফিতরা দেওয়া প্রয়োজন এবং ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কত নির্ধারণ করেছে। তো এই ধারণা থেকে আপনি যদি পরিপূর্ণ তথ্যগুলো জানতে চান তাহলে এই অংশটুকু সহকারে পড়তে থাকুন।

আপনি যখন ফিতরা কোন মানুষকে প্রদান করবেন তখন অবশ্যই দেখবেন সে দরিদ্র এবং অসহায় কিনা। দরিদ্র এবং অসহায় বলতে বোঝানো হচ্ছে যার প্রতিদিনের খাবার খরচ জোগাতে সারাদিন পরিশ্রম করতে হয়। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করার পরে মোটামুটি খাবার খরচ চালাতে পারে।

তবে এই ধরনের ব্যক্তি যদি আপনাদের আত্মীয় স্বজনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে তাহলে তাদেরকে অগ্রাধিকার দিবেন। এরপরে যারা আশেপাশের ব্যক্তি রয়েছে এরকম তাদেরকে প্রদান করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে, তাহলে কাজটি স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে পূরণ করতে পারবেন।

এরপরে দেখবেন যে ওই ব্যক্তি যদি মিসকিন হয়ে থাকে। মিসকিন বলতে বোঝানো হচ্ছে তার অর্থ সম্পদ বলতে কিছু নেই, তার কোন বাড়িঘর নেই, এমনকি সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে। যদি এরকম ব্যক্তি আপনার নজরে পরে কিংবা আপনার বাড়িতে আসে তাহলে তাদের কখনোই ফেরাবেন না।

এর পরে রয়েছে এমন ব্যক্তি যে প্রচন্ডভাবে ঋণগ্রস্ত কিন্তু তার ঋণ পরিশোধ করার কোন প্রকার বুদ্ধি নেই। যদিও সে পূর্বে একজন সামর্থ্যবান মুসলমান ছিল কিন্তু বর্তমানে ঋণের এর কারণে সে বর্তমানে অসহায়ত্বের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। এরকম ব্যক্তিদের ফিতরা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

এরপরে রমজান মাসে আপনি যদি কোন মুসাফির দেখতে পান যিনি সফর করতে করতে আর্থিক সংকটে পড়ে গিয়েছে এরকম ব্যক্তিকে তার নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফিতরা প্রদান করা জায়েজ আছে। হোক সেটা টাকা পয়সা দিয়ে কিংবা অন্য কোন ভাবে। তা অবশ্যই দেখতে হবে তিনি বৈধভাবে এবং সৎ উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করছে কিনা।

এর পরে আপনার সামনে যদি কোন এমন ব্যক্তি আসে যে নতুন ইসলাম গ্রহণ করেছে কিন্তু আর্থিকভাবে খুবই অস্বচ্ছল। এরকম ব্যক্তিকে আপনি অবশ্যই ফিতরা প্রদান করতে পারবেন এতে কোন প্রকার সমস্যা নেই। বরং এরকম ব্যক্তি পেলে আপনি আগ্রহ সহকারে ফিতরা প্রদান করবেন যাতে সে ইসলামের নিয়ম নীতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পারে এবং তার পরিচিত অন্যান্য ধর্মের মানুষদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে পারে।

ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না

ফিতরা প্রদানের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি আপনাকে অবশ্যই নজরদারিতে রাখতে হবে যে আসলে ফিতরা কাদের দেওয়া যাবে না। প্রথম কথা হল ওই ব্যক্তি যদি কাফের কিংবা অমুসলিম হয় তাহলে ফিতরা দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। আপনি হয়তো আর্থিকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করতে পারেন কিন্তু ফিতরা যখন দেবেন তখন তাদেরকে এই ফিতরার আওতাধীন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে রাখবেন না।

এরপরে আমাদের সমাজের সবথেকে যে বিষয়টি বেশি লক্ষণীয় সেটা হল গরিব না হয়েও অসহায়ত্বের পরিচয় দেওয়া। এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা আর্থিকভাবে সচ্ছল কিন্তু ফিতরা গ্রহণ করার জন্য গরিবের হালত আপনার সামনে উপস্থাপন করছে। এরকম ব্যক্তিদের আপনি কখনোই ফিতরা প্রদান করবেন না।

এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরির মানুষদের কখনোই ফিতরা প্রদান করা যাবে না যেমন ধনী ব্যক্তি, নিজ পরিবারের অর্থাৎ যাদের সাথে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে এবং যাদের আপনি চাইলে ভরণ পোষণ দিতে পারেন এরকম ব্যক্তিদের ভিতরে দেওয়া যাবে না। এই কাজটি কিন্তু আমাদের সমাজে অনেকেই করে থাকে কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল।

তবে আপনি চাইলে এই ফিতরা প্রদানের কাজটি আরো যুক্তিযুক্ত ভাবে সম্পন্ন করতে পারেন। এজন্য আপনাকে অবশ্যই একটি ইসলামিক সংগঠন তৈরি করতে হবে। এ সংগঠনের কাজ হলো তাদের আওতাধীন এলাকা কিংবা গ্রামের প্রতিটি মুসলিম প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য থেকে ফিতরা সঞ্চয় করা এবং যারা ফিতরা গ্রহণের জন্য উপযুক্ত তাদেরকে প্রদান করা।

ফিতরা দেওয়ার নিয়ম

ফিতরা দেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে নিয়ম অবলম্বন করতে হবে। এই নিয়মগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিতরা আপনাকে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগেই প্রদান করতে হবে। যদিও পরে দেওয়া যায় অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের নামাজের পরেও দেওয়া যায় তবে সেটা সদকা হিসাবে গণ্য হবে। তবে উত্তম হলো রমজানের শেষের দিকে ঈদুল ফিতরের আগে দিয়ে দেওয়া।

এক্ষেত্রে বিভিন্ন দ্রব্য প্রদান করা হয় যেমন গম, আটা, খেজুর, কিসমিস, যব, চাল ইত্যাদি। প্রতি বছর কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশন একটি চার্ট প্রদান করে, এবং সেই অনুসারী বাংলাদেশের মানুষ জন ফিতরা আদায় করে থাকে।

ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমদের মাথাপিছু আয় এবং তাদের সমস্ত রোজগার এর উপরে গড় ভিত্তি করে একটি মূল্য নির্ধারণ করে। যেটির উপরে নির্ভর করেই ফিতরা আদায় করা হয়ে থাকে। তবে ২০২৫ সালে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এখন পর্যন্ত ফিতরা কত টাকা দিতে হবে সেটা নির্ধারণ করা হয় নাই।

অর্থাৎ আপনি যদি জানতে চেয়ে থাকেন যে ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারণ করা হয়েছে? সেটা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিন্তু এই ফাউন্ডেশন টি ফিতরা নির্ধারণ করে দেবে। তখন আমরা আপনাদের নিকট তথ্যটি উল্লেখ করতে পারব।

তবে ২০২৪ সালের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের উপরে ৮২ টাকা ৫ পয়সা ফিতরা আদায়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তো এই অনুপাতে আপনি মোটামুটি একটু ধারণা রাখতে পারেন।

এবারের ফিতরা কত টাকা ২০২৫। ফিতরার পরিমাণ কত

যত ইসলামিক ফাউন্ডেশন এখনো ২০২৫ সালের ফিতরা নির্ধারণ করেনি তাই নির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না যে এবারের ফিতরা কত টাকা হবে। তবে ফিতরা আদার জন্য আপনাকে অবশ্যই মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। আরেকটি বিষয় আগে থেকে দেখে রাখবেন যে কারা ফিতরা নেওয়ার জন্য উপযুক্ত, তাদেরকেই আপনি আগে প্রদান করবেন।

শেষ কথা

আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন যে ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর চার্ট অনুসারে। আগেও আপনাদের বলা হয়েছে যে এটি এখনো পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়নি, তবে নির্ধারণ করা হলে আপনাদের সামনে অবশ্যই সঠিক তথ্য নিয়ে হাজির হব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪